

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-কে বরণ করে নিতে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে বর্ণাঢ্য বৈশাখী শোভাযাত্রা।
সোমবার (১ বৈশাখ) বিকেল ৩টায় সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে বৈশাখী শোভাযাত্রার শুভসূচনা হয়। পরে এটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে এক সমাপনী সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “বৈশাখী উৎসব আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই উৎসব আত্মিক পরিশুদ্ধির মাধ্যমে সমাজে সম্প্রীতি, সংহতি ও মিলনের বার্তা পৌঁছে দেয়। দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে যুক্ত সকলকে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই।”
শোভাযাত্রা-পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদমুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশে মুক্ত সংস্কৃতিচর্চার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ আমাদের জাতীয় পরিচয়ের মেরুদণ্ড, যা সকল জনগোষ্ঠীকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। সিলেটবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এই উৎসবকে করে তুলেছে আরও বর্ণাঢ্য।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, “বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের গৌরবের বিষয়, যা আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের মর্যাদা বাড়িয়েছে। লোকজ ঐতিহ্য ও সাধকদের বাণীতে নিহিত রয়েছে মানবিকতা, ভালোবাসা ও সহনশীলতার বাণী।”
মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদি বলেন, “ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি সম্প্রদায়ের উৎসব আমাদের জাতীয় জীবনের অংশ। নববর্ষ সবার জীবনে বয়ে আনুক শান্তি, আনন্দ ও সমৃদ্ধি। সিলেটবাসীসহ দেশের সকল মানুষকে নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।”
শোভাযাত্রার সমাপনী অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
বৈশাখী শোভাযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন, মহানগর যুবদলের সভাপতি শাহ নেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ, মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মির্জা সম্রাট হোসেন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মুর্শেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আফসর খাঁন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদ, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, শ্রমিক দলের শাহ আব্দুল মুকিত, আব্দুল আহাদ, নুরুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম জীবন। নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেন জেলা মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সভানেত্রী তাসনিম শারমিন তামান্না, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী নিগার সুলতানা ডেইজি, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক কুমকুম ফাহিমা, মহানগর মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা জামান রোজী। জাসাসের পক্ষে ছিলেন জেলা জাসাসের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, মহানগর জাসাসের আহ্বায়ক তাজ উদ্দিন মাসুম, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব রায়হান এইচ খাঁন এবং মহানগর জাসাসের সদস্য সচিব রাসেল রানা।শোভাযাত্রার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন জেলা বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আল মামুন।
পহেলা বৈশাখের সকাল শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী পান্তা-ইলিশ পরিবেশনার মাধ্যমে। পরে অঙ্গ সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত লোকজ ক্রীড়া “কাবাডি” প্রতিযোগিতা বৈশাখী উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করে। জাসাসের আয়োজনে নববর্ষের সন্ধ্যায় স্থানীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পরিবেশনায় জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন সাধারণ দর্শনার্থীরা।