ওয়াকফ বিল প্রসঙ্গে মমতা: দিদি আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে

প্রকাশিত: ৬:০২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক –

ভারতে ওয়াকফ বিল পাশ হওয়া নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সংখ্যালঘুদের আশ্বস্ত করলেন। বুধবার (৯ এপ্রিল) এক সভায় তিনি বললেন, দিদি আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে, কোনো বিভাজন হবে না বাংলায়।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার জৈন সম্প্রদায়ের মহাবীরজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে বুধবার উদ্‌যাপিত হচ্ছে ‘নবকার মহামন্ত্র দিবস’। তারই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই বলেন, আমি জানি ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে সংখ্যালঘুদের মনে একটা দুঃখ আছে। আপানারা ভরসা রাখুন, বাংলায় এমন কিছু হবে না যাতে বিভাজন হয়। সবাইকে একসঙ্গে থেকে বাঁচতে হবে। জিও, জিনে দো (বাঁচুন, বাঁচতে দিন)।

মমতা আরও বলেন, আপনারা সবাই একসঙ্গে বাঁচার কথা বলুন। কেউ কেউ রাজনৈতিক প্ররোচনা দেয়। আমি বলছি, দিদি আছে, দিদি আপনাদের রক্ষা করবে। আপনাদের সম্পত্তি রক্ষা করবে। কেউ উসকানিতে পা দেবেন না।

ওয়াকফ বিল সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাতে সই করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। আইনের গেজেট নোটিফিকেশনও হয়ে গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, সমগ্র সমাজের স্বার্থে, মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থে এই চমৎকার আইন (ওয়াকফ আইন) প্রণয়নের জন্য আমি দেশের সংসদকে অভিনন্দন জানাই। এখন ওয়াকফের পবিত্র চেতনা সুরক্ষিত হবে। মুসলিমদের অধিকারও সুরক্ষিত হবে।

ওয়াকফ কী?

আরবি ‘ওয়াকাফা’ শব্দ থেকে এসেছে ‘ওয়াকফ’ – এর অর্থ হল সম্পত্তির হাতবদল। ভারতে যখন কোনো ব্যক্তি মুসলিম আইনের আওতায় ধর্মীয় বা দাতব্য কারণে তার সম্পত্তি দান করেন, তখন সেটাকেই বলে ওয়াকফ সম্পত্তি। এর মধ্যে মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, আশ্রয়কেন্দ্র বা শুধু জমি – সব কিছুই থাকতে পারে।

যে কাজের জন্য সম্পত্তিটি দান করা হয়েছে, সেটি ছাড়া অন্য কোনো কাজে ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহার করা যায় না, এবং এটি কাউকে বিক্রি বা হাতবদলও করা যায় না।

অন্যভাবে বললে, ভারতে হিন্দু সমাজের মধ্যে যেটাকে ‘দেবোত্তর সম্পত্তি’ বলে গণ্য করা হয়, মুসলিম সমাজে মোটামুটি তারই অনুরূপ সংস্করণ হলো ওয়াকফ।

ইতোমধ্যে এই বিলটিকে চ্যালেঞ্জ করে অন্তত চারটি পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়েছে, যেগুলো করেছেন এআইএমআইএম, কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি বা আরজেডি-র মতো দলের নেতারা এবং অন্তত একটি সিভিল রাইটস গোষ্ঠী।

তারা প্রত্যেকেই দাবি করছেন, এই বিলটি চূড়ান্ত অসাংবিধানিক এবং দেশের সংখ্যালঘু নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। এখন সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কী অবস্থান নেয় এবং মামলাগুলো শুনানির জন্য গ্রহণ করে কি না, সেটাই দেখার।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন