
Wifi 3Lens 3Display Camera
- ✅ 360° কভারেজ: ৩টি শক্তিশালী লেন্সে।
- ✅ অলরাউন্ডার: WiFi, নাইট ভিশন ও মুভমেন্ট অ্যালার্ট।
- ✅ ৩ ডিসপ্লে: একসাথে ৩টি ভিউ মনিটরিং।
- ✅ ওয়ারান্টি: Champion Brand এর ১ বছরের ওয়ারান্টি।
নিউজ ডেষ্ক
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান, এবং এর মূল উৎস হলো পবিত্র আল-কুরআন। এই মহাগ্রন্থ আল্লাহ তা’আলার বাণী, যা মানুষের হেদায়েত ও মুক্তির পথ দেখানোর জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। কুরআন তেলাওয়াত করা শুধু একটি ইবাদত নয়, এটি একজন মুসলিমের জন্য নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নতির মাধ্যম। এই নিবন্ধে কুরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব ও ফজিলত নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।
কুরআন তেলাওয়াতের গুরুত্ব
কুরআন তেলাওয়াত করা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম। এটি মুসলিম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতার চাবিকাঠি। কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে ও হাদিসে তেলাওয়াতের গুরুত্ব এবং এর প্রতিদান স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
“যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসা আশা করে যাতে কোন প্রকার ক্ষতি নেই।” — (সূরা ফাতির: ২৯)
এই আয়াতের মাধ্যমে বোঝা যায়, যারা নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত করেন, তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অনন্য প্রতিদান লাভ করবেন।
কুরআন তেলাওয়াতের ফজিলত:
১. আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার প্রাপ্তি।
প্রত্যেক অক্ষর তেলাওয়াতের মাধ্যমে একজন মুসলিম সওয়াব লাভ করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব থেকে একটি অক্ষর পাঠ করবে, সে এর জন্য একটি নেকি পাবে আর ঐ একটি নেকিকে গুণ বাড়ানো হবে। আমি বলি না যে ‘আলিফ লাম মীম’ একটি অক্ষর, বরং ‘আলিফ’ একটি অক্ষর, ‘লাম’ একটি অক্ষর এবং ‘মীম’ একটি অক্ষর।” — (তিরমিজি: ২৯১০)
২. অন্তরের প্রশান্তি লাভ।
কুরআন তেলাওয়াত অন্তরের কঠোরতা দূর করে এবং মনের শান্তি প্রদান করে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
“জেনে রাখ, আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্ত হয়।” -(সূরা রাদ: ২৮)
কুরআন তেলাওয়াত এক ধরনের আধ্যাত্মিক নিরাময় যা দুশ্চিন্তা, হতাশা এবং মানসিক ক্লান্তি দূর করে।
৩. কিয়ামতের দিন সুপারিশ করবে।
কুরআন তেলাওয়াত কিয়ামতের দিন তার পাঠকের জন্য সুপারিশ করবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“তোমরা কুরআন পড়, কারণ এটি কিয়ামতের দিন তার পাঠকদের জন্য সুপারিশকারী হবে।” — (মুসলিম: ৮০৪)
৪. মর্যাদা বৃদ্ধি।
তেলাওয়াতের মাধ্যমে একজন মুমিনের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“আল্লাহ তাআলা এই কুরআনের মাধ্যমে অনেক জাতিকে মর্যাদা দান করেন এবং অনেককে হীন করেন।” — (মুসলিম: ৮১৭)
অর্থাৎ যারা এই কুরআনের অনুসারী হবে তারা দুনিয়ায় মর্যাদাবান হবে এবং আখিরাতে জান্নাত লাভ করবে। আর যারা একে অস্বীকার করবে তারা দুনিয়ায় লাঞ্ছিত হবে আর পরকালে জাহান্নামে পতিত হবে।
৫. ফেরেশতাদের সঙ্গে সঙ্গী হওয়া।
যারা সুন্দরভাবে এবং ধীরে ধীরে কুরআন তেলাওয়াত করেন, তারা ফেরেশতাদের সঙ্গ লাভ করেন। হাদিসে এসেছে:
“যে ব্যক্তি কুরআন পড়ে এবং তা সুশৃঙ্খলভাবে তেলাওয়াত করে, সে মর্যাদাপূর্ণ ও অনুগত ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে।” — (বুখারি: ৪৯৩৭)
৬. গুনাহ মাফের সুযোগ।
কুরআন তেলাওয়াত করা গুনাহ মাফের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। হাদিসে উল্লেখ আছে যে, তেলাওয়াতের সময় প্রতিটি আয়াত পাঠকের জন্য রহমত ও গুনাহ মাফের দরজা খুলে দেয়।
কুরআন তেলাওয়াতের পদ্ধতি ও আদব:
তেলাওয়াতের সময় কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও শিষ্টাচার পালন করা গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো হলো:
১. ওজু করা: পবিত্রতা রক্ষা করা জরুরি।
২. আস্তে এবং ধীরে পড়া: কুরআন ধীরে ধীরে ও সুরেলা কণ্ঠে পড়া উচিত।
৩. তাজবিদ মেনে পড়া: শুদ্ধ উচ্চারণ এবং তাজবিদের নিয়ম মেনে তেলাওয়াত করা প্রয়োজন।
৪. অর্থ বুঝার চেষ্টা করা: আয়াতের অর্থ ও মর্ম বোঝার জন্য সময় দেয়া উচিত।
৫. নীরব পরিবেশে পড়া: মনোযোগ ধরে রাখার জন্য শান্ত পরিবেশে তেলাওয়াত করা উত্তম।
কুরআন তেলাওয়াতের দুনিয়াবী উপকারিতা :
১. স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি।
কুরআন তেলাওয়াত মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত করে। এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক।
২. শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা।
কুরআন তেলাওয়াতের সুর এবং ছন্দ মানুষের মনকে প্রশান্ত করে। এটি দুশ্চিন্তা কমায় এবং মানসিক চাপ দূর করে।
৩. নৈতিক উন্নয়ন।
তেলাওয়াতের মাধ্যমে একজন মানুষ নৈতিকভাবে উন্নত হয়। কুরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করলে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করা যায়।
আখিরাতের প্রতিদান।
কুরআন তেলাওয়াতকারী ব্যক্তিদের জন্য জান্নাতে বিশেষ মর্যাদা ও পুরস্কার নির্ধারিত রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“যে ব্যক্তি কুরআন পড়ে এবং এর উপর আমল করে, তার পিতামাতাকে এমন একটি মুকুট পরানো হবে যার আলো সূর্যের চেয়েও উজ্জ্বল।” — (আবু দাউদ: ১৪৫০)
উপসংহার:
পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করা শুধু সওয়াব অর্জনের মাধ্যম নয়, এটি একটি আত্মশুদ্ধির প্রক্রিয়া। এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য আল্লাহর এক অমূল্য নেয়ামত। প্রতিদিন তেলাওয়াতের অভ্যাস গড়ে তোলা আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য কল্যাণকর। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে কুরআনের প্রতি ভালোবাসা এবং তা নিয়মিত তেলাওয়াত করার তৌফিক দান করুন।
“হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের প্রতি কুরআনকে হেদায়েত, রহমত ও আলো হিসেবে প্রতিষ্ঠা করুন। আমিন।”
হাফেজ মাওলানা আমীর হামযা
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক : Ad-Dawah online madrasa.
সাবেক প্রধান শিক্ষক (হিফজ বিভাগ)
সেন্দী আশরাফুল উলুম মাদ্রাসা।
হাইজাদী, আড়াইহাজার, নারায়ণগঞ্জ।



